ইউপিতে দলগুলোর অংশগ্রহণ অর্ধেকের কম

আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন দলীয়ভাবে আয়োজিত হলেও রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ তুলনামূলক কমেছে। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধিত ৪০টি দলের মধ্যে অংশ নিচ্ছে অর্ধেকেরও কম।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পৌরসভা নির্বাচনের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, আসন্ন ইউপি নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দল এবং দলের প্রার্থী সংখ্যা দু’দিক থেকেই কম।

ইসির উপ-সচিব মো. সামসুল আলম জানান, গত ৩০ ডিসেম্বরের ২২৮টি পৌর নির্বাচনে ২০টি দলের প্রার্থী দেয়। এতে মেয়র পদে মোট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলো ৯৪৫ জন। তাদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলো ২৮৫ জন। আর দলগুলোর প্রার্থী সংখ্যা ৬৬০ জন।

কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ছাড়া ইসিতে নিবন্ধিত অবশিষ্ট ৩৮টি দলের অংশগ্রহণ খুবই নাজুক। এক্ষেত্রে ২০টির বেশি দল মনোনয়নপত্রই গ্রহণ করেনি।

ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার দেওয়া তথ্যমতে, পৌরসভা নির্বাচনে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, জেপি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশর বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, খেলাফত মজলিশ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জাতীয় পার্টি অংশ নিয়েছিলো। যদিও প্রধান তিনটি দল ছাড়া অন্য দলগুলো ২ শতাংশেরও কম ভোট পেয়েছে।

আর প্রথম ধাপে ৭৩২ ইউপি নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যা হচ্ছে মাত্র ১৩টি। এগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ছাড়া অন্য দলগুলোর অংশগ্রহণ খুবই নাজুক।

ইসির দেওয়া তথ্যমতে, প্রথম ধাপে আওয়ামী লীগ ৭৩১, বিএনপি ৬১৩, জাতীয় পার্টি ১২৭, জাসদ ২৯, বিকল্পধারা বাংলাদেশ ৪, ওয়ার্কার্স পার্টি ২৩, জাতীয় পার্টি (জেপি) ১৭, বিএনএফ ৭, কমিউনিস্ট পার্টি ৪, তরিকত ফেডারেশন ১, জমিয়তে উলমায়ে ইসলাম ১, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ২২৭, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ন্যাপ এর ৩ জন মাত্র প্রার্থী দিয়েছে।

তবে দ্বিতীয় ধাপের ৬৪৩ ইউপিতে অংশ নিচ্ছে ১৭টি দল। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ বিএনপি ছাড়া অন্য দলগুলোর তেমন অংশগ্রহণ এ পর্যায়েও নেই।

জানা গেছে, জাতীয় পার্টির ১৫৬ জন, জাসদের ২৪ জন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের ১ জন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ৬ জন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ৯২ জন, জেপি’র ৫ জন, এনপিপি’র ২ জন, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ’র ২ জন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র ১ জন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের ১ জন, ফেলাফত মজলিসের ১ জন, বাসদ’র ১ জন, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলের ১ জন ও জাকের পার্টির ৩ জন প্রার্থী রয়েছেন।

এ বিষয়ে ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম বলেন, দলগুলো আগে প্রত্যক্ষভাবে স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থীকে সমর্থন দিত। কিন্তু এবার দলীয়ভাবে ভোট হওয়ায় দলগুলোর সরাসরি অংশ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। দলগুলো বেশি বেশি অংশগ্রহণ প্রান্তিক পর্যায়ে গণতন্ত্রের চর্চা আরো বাড়বে। এক্ষেত্রে তাদের অংশগ্রহণ আরো বাড়ানো উচিত।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর